কোনো ব্যক্তি তার স্ত্রীকে পাওয়ার জন্য **মাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য নয়**,
স্বামী ও মায়ের সম্পর্ক নিয়ে ইসলামের বিধান
ইসলামে মা ও স্ত্রী—উভয়ের হক (অধিকার) সুস্পষ্টভাবে নির্ধারিত আছে। কোনো ব্যক্তি তার স্ত্রীকে পাওয়ার জন্য মাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য নয়, এবং কোনো স্ত্রীও স্বামীকে এমন শর্ত দিতে পারে না যা তার মা-বাবার প্রতি দায়িত্ব পালনে বাধা সৃষ্টি করে।
১. মায়ের অধিকার ইসলামে
✅ আল্লাহ তাআলা বলেন:
"আর আমি মানুষকে তার মা-বাবার প্রতি সদয় আচরণ করার নির্দেশ দিয়েছি। তার মা কষ্টের পর কষ্ট সহ্য করে তাকে গর্ভে ধারণ করেছে এবং দু’বছর তার দুধ ছাড়ানো হয়েছে। অতএব, তুমি আমার প্রতি এবং তোমার মা-বাবার প্রতি কৃতজ্ঞ হও।" (সুরা লুকমান: ১৪)
✅ হাদিসে এসেছে:
এক ব্যক্তি রাসূল (সা.)-এর কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলেন:
"হে আল্লাহর রাসূল! আমার উপর কার অধিকারের ব্যাপারে আমি সবচেয়ে বেশি যত্নবান হব?"
রাসূল (সা.) তিনবার বললেন: "তোমার মা।" তারপর বললেন: "তোমার বাবা।" (সহিহ বুখারি: ৫৯৭১, মুসলিম: ২৫৪৮)
📌 এই হাদিস থেকে বোঝা যায় যে, একজন পুরুষের জন্য তার মায়ের অধিকার স্ত্রীসহ সকলের চেয়ে বেশি।
২. স্ত্রীর অধিকার ও তার সীমাবদ্ধতা
✅ স্বামীর ওপর স্ত্রীর হক রয়েছে এবং তাকে তার স্ত্রীর প্রতি সুবিচার করতে হবে।
✅ তবে স্ত্রী এমন কোনো দাবি করতে পারে না যা স্বামীকে তার মায়ের দায়িত্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করে।
✅ রাসূল (সা.) বলেন:
"তোমাদের মধ্যে উত্তম ব্যক্তি সেই, যে তার পরিবারের (স্ত্রীর) প্রতি উত্তম আচরণ করে।" (তিরমিজি: ৩৮৯৫)
📌 তবে এই দায়িত্ব স্বামীর মা-বাবাকে ত্যাগ করার অনুমতি দেয় না।
৩. সমাধান: কিভাবে ভারসাম্য রাখা যায়?
✅ স্ত্রীকে বোঝানো উচিত যে মাকে ছেড়ে দেওয়া ইসলামসম্মত নয় এবং মা-বাবার খেদমত করা স্বামীর দায়িত্ব।
✅ স্ত্রীর প্রতি ন্যায়বিচার করা হবে, তবে মায়ের হক কখনো উপেক্ষা করা যাবে না।
✅ দুই পক্ষের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে সম্পর্ক মধুর করার চেষ্টা করতে হবে।
📌 সংক্ষেপে:
-
স্ত্রী যদি স্বামীকে মাকে ত্যাগ করার শর্ত দেয়, তাহলে এটি ইসলামের দৃষ্টিতে অবৈধ।
-
একজন পুরুষ তার স্ত্রীকে ভালোবাসবে, তবে মা-বাবার হক কখনো লঙ্ঘন করা যাবে না।
-
সমাধান হলো বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে উভয়ের প্রতি দায়িত্ব পালন করা এবং পারিবারিক সম্পর্ক সুন্দর রাখা।
❗ মা-বাবার হক কখনো ত্যাগ করা যায় না, আর স্ত্রীকেও ভালোভাবে বোঝানোর মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা উচিত। 😊
No comments